ডেস্ক নিউজ : পদ্মফুল পৃথিবীজুড়েই কমবেশি জন্মে। যা বেশির ভাগই গোলাপি ও সাদা রঙের। কিন্তু বাংলাদেশে হলুদ রঙের এক পদ্মের সন্ধান মিলেছে। যা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায়নি।
এই হলুদ পদ্মের সন্ধান মিলেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে। গবেষকরা মনে করছেন, বিশ্বের মধ্যে এটা পদ্মের নতুন এক জাত। গবেষকদের মতে, উদ্ভিদ বিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন।
বুড়িচংয়ে যে নতুন জাতের পদ্মটি পাওয়া গেল, তা ঠিক হলুদ নয়, হলুদাভ। অফহোয়াইটও বলা যেতে পারে। তবে সাদা কখনোই নয়। অপূর্ব সুন্দর। যেন অসংখ্য পাঁপড়ির একটি তোড়া সবুজ পাতা ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণ ফোটা হলুদ পদ্মের পাশে গোলাপি পদ্মটি দেখতে কিছুটা রুগ্ন মনে হচ্ছে। যদিও পাঁপড়ির দৈর্ঘ্য গোলাপি পদ্মেরই বড়।
পদ্মকে দুটি প্রজাতিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন- এশিয়ান বা ইন্ডিয়ান পদ্ম ও আমেরিকান বা ইয়োলো লোটাস। তবে এই দুই জাতের রঙ ও বৈশিষ্ট্য থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হলুদ রঙের পদ্মটি। এর বর্ণ হালকা আবার পাঁপড়ির সংখ্যাও অনেক বেশি।
অন্যান্য পদ্ম থেকে হলুদ পদ্মের পার্থক্য রয়েছে। এশিয়ান বা আমেরিকান পদ্মে একটি ফুলে পাঁপড়ি থাকে ১২ থেকে ১৮টি। সেখানে বুড়িচংয়ের এই হলুদ পদ্মে পাঁপড়ি সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। ভেতরের পাঁপড়ি পুংকেশরের সঙ্গে যুক্ত। এই ফুলে পুংকেশরের সংখ্যাও অনেক বেশি, প্রায় তিনশ’টি। এশিয়ান পদ্মে তা দুইশ’র মধ্যেই থাকে। পাঁপড়ি ছোট এবং বেশি হওয়ায় হলুদ পদ্মের কলি একটু বেঁটে, পেট মোটা ধরনের।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও বেঙ্গল প্লান্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে নতুন জাতের হলুদ পদ্ম নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। এই নতুন জাতের পদ্মের ছবিসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির নামকরণ বিভাগ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় হারবেরিয়ান জাদুঘর ইংল্যান্ডের কিউ গার্ডেনে পাঠিয়েছেন গবেষকরা।
আন্তর্জাতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উদ্ভিদবিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন। এই পদ্মের নামকরণও হবে আমাদের দেশের দেওয়া নামে।